May 18, 2024, 12:25 pm

সংবাদ শিরোনাম
দিনাজপুরে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার উদ্যোগে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী নির্বাচনী দায়িত্ব পালন’সহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম-আইজিপি রংপুরে সিএনজি মাহিন্দ্রা সড়কে চলাচল ও রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে মানববন্ধন কুড়িগ্রামে নির্বাচনে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ, সহিংসতা হলে ছাড় পাবে না কেউ পটুয়াখালীতে অর্ধশতাধিক অসহায় মানুষ পেল প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তা সাংবাদিক জীবন কৃষ্ণ মন্ডল’র পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ত্রান প্রতিমন্ত্রী সিরাজগঞ্জে র‍্যাব-১২’র অভিযানে ২১৬ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন গ্রেফতার রংপুরের হাজীরহাট এ তিন টি পুরাতন অস্ত্র উদ্ধার করলেন এলাকাবাসী সমস্যায় জর্জরিত গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে যন্ত্রপাতি,নেই টেকনিশিয়ান রুগীরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত রংপুর সদর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানব্বন্ধন

নবীগঞ্জে চাঁদা না দেয়ায় ঘর-বাড়ি ছাড়লেন প্রধান শিক্ষক মাহবুব আহমদ সুহাগ! থানায় লিখিত অভিযোগ

নবীগঞ্জ রিপোর্টারঃ
নবীগঞ্জ উপজেলার কামারগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাহবুব আহমদ সুহাগ নামের এক ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে আপন ভাই কর্তৃক শারিরিক ও মানষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।নিয়মিত চাঁদা না দেয়ায় আপন দুই ভাইয়ের উপর এ নির্যাতন ও হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে৷ হয়রানির শিকার শিক্ষক জীবন রক্ষার্থে  ঘর-বাড়ি ও স্ত্রী সন্তান রেখে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন৷ এ ঘটনার প্রতিকার ছেয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরকারী স্কুল শিক্ষক তিনি উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ইমতিয়াজ মাস্টারের ছেলে ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কামারগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক৷

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করে বলেন, তিনি বিগত ২০১০ সাল হইতে আজ এখন পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলার ৩৭নং কামারগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে ও বর্তমানে  (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন৷ সাংসারিক জীবনে তার পরিবারের স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে পৃথকভাবে বসবাস করে আসছেন।
তারই আপন বড় ভাই মহসিন আহমদ (৪৯) ও উপজেলা গণফোরামের সদস্য সচিব বড় ভাই মুরাদ আহমদ (৪৬) নামের উল্লেখিত ব্যাক্তিদ্বয় আপন ভাইর সাথে কোন আইন কানুন না মেনে
আইন অমান্যকারী, পর সম্পদ লোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের অত্যাচারে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন৷ তাদের সাথে ওই শিক্ষকের  পারিবারিক সহায় সম্পত্তি ও চাঁদাদাবী নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলে আসছিলো। তার সহায় সম্পদ, টাকা- পয়সা গ্রাস করার জন্য তার আপন ভাই মহসিন ও মুরাদ উঠে পড়ে লেগেছেন। এমনকি নির্যাতনের পাশাপাশি তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।তাকে সাজানো মিথ্যা অপবাদের নাটক সাজিয়ে গত ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের উপশহরের তেররতনে অবস্থিত এইম ইন লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে জোর পূর্বক ৮/১০ জন ভাড়াটিয়া গোন্ডা বাহিনী দিয়ে বাসা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধরে নিয়ে মাদকাসক্ত বানিয়ে অতি সু-কৌশলে তার উপর চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন৷ এতে প্রথমতো তাকে প্রায় সাড়ে তিন মাস বন্দী করে নির্যাতন করা হয়। সাড়ে তিন মাস পর যখন তাকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে ছাড়িয়ে আনার পরে উপরোক্ত বিবাদীগণ তাকে হুমকি দেয় উপরোক্ত ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ করলে পূণঃরায় আবারো মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতন করা হবে। এরপর থেকে তাদের হুমকির মুখে জিম্মি হয়ে তিনি তাদেরকে প্রতি মাসে তার সরকারী বেতনের একটি অংশ বিবাদীগণকে মাসোহারা দিয়ে আছিলেন। যখনই তাদেরকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিতেন, টিক তখনই আবার তার বর্তমান কর্মস্থল বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে ছাত্র/ছাত্রীদের পাঠদানরত অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে হঠাৎ করে আবারো সাদা মাইক্রোবাস ও একদল লোক বিদ্যালয়ের অফিসের সামনে গাড়ী থামিয়ে সেই এইম ইন লাইফের ৮/১০ জন লোক জোর পূর্বক গাড়ি যোগে তুলে এইম ইন লাইফ সিলেটে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাবার পর তিনি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কেন হঠাৎ করে বিদ্যালয় থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসলেন। এর প্রতি উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এসব বিষয় আপনার জানার দরকার নেই। আপনার ভাইদ্বয় আমাকে বলেছেন আপনি নেশা সেবন করেন। তখন আমি অনুরোধ  বলি আমাকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখুন আমি নেশাগস্ত কি? কিন্তু কে শুনে কার কথা! তারা আমার কোন কথা বার্তা বা আর্থনাদ না শুনে আমার উপর অমানবিক নির্যাতনের স্টিমরোলার চালাতে থাকে। বিনিময়ে মহসিন ও মুরাদ তাকে
মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি৷ এক পর্যায়ে প্রায় দেড় মাস পরে বিবাদীগণ আমাকে উক্ত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে মৌখিক শর্ত সাপেক্ষে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে মর্মে বন্দীদশা থেকে মুক্তি করিয়ে আনা হয়। এরপর থেকে তাদেরকে সুহাগ নিয়মিত  টাকা দিয়ে আসছিলেন। বিবাদীগণকে টাকা দিতে দিতে এক পর্যায়ে তিনি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। ঋণগ্রস্থ হওয়ার পরে যখন আবারও টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন তখন ২০১৯ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর রাতে পূণরায় রাত ২টার দিকে আমার বাসা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় পূর্বের ন্যায় মাইক্রোবাস যোগে  সিলেটের কদমতলীস্থ এইম ইন লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে আবারো প্রায় ২মাস প্রচন্ড রকমের অমানসিক ও অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরে আবারও তিনি তার মান সম্মানের কথা চিন্তা করে মুরাদ ও মহসিনের হুমকির মুখে জিম্মি হয়ে প্রতি মাসে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে আসছিলেন। ইদানিং আবারো তার সহায় সম্পদ গ্রাস করিতে ও চাঁদা দেওয়ার জন্য তারা একের পর এক চাপ সৃষ্টি শুরু করে। একদিকে লকডাউন টাকা পয়সা নাই, স্কুলও বন্ধ। কোথায় পাব আমি টাকা। আমি টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে গত ৭জুলাই রাত সাড়ে ১১টার সময় অপরিচিত ৭/৮ জন লোক সাদা মাইক্রোবাস নিয়ে আমার বাসার সামনে এসে হাকডাক দিলে আমি প্রাণের ভয়ে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি৷ বর্তমানে তাদের কারণে আমার সংসার, স্ত্রী- সন্তান, বাসা- বাড়ী সব ত্যাগ করে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি বলে এ প্রতিনিকে তিনি জানান৷
উল্লেখিত, বিবাদীগণ কর্তৃক যে কোন সময় তার  জানমালের ক্ষতি সাধন সহ তাকে আবারো মাদকসেবী বানিয়ে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে ভয়ংকর রকমের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সম্ভাবনা রয়েছে৷  তিনি আরো বলেন, আমার জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি ও আমাকে প্রাণে  হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে তারা। মাহবুব আহমদ সুহাগ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি জীবনে কোনদিন মাদক সেবনতো দূরের কথা এসবের দ্বারপ্রান্তেও কখনোই যাইনি। কিন্তু আমার আপন ভাই হয়েও তারা আমার সম্পদ ও টাকার লোভে আমাকে এভাবে শারিরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করছেন। তিনি এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবী জানান৷ এছাড়াও তিনি তার ফেইসবুক লাইভে এসে তাকে নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন৷
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর